ই ক্যাপ খেলে কি হয় - ই ক্যাপ এর উপকারিতা ও অপকারিতা
আজকের আর্টিকেলে আমরা ই ক্যাপ খেলে কি হয়, ই ক্যাপ এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানবো। আপনিও যদি ই ক্যাপ এর উপকারিতা ও অপকারিতাসহ ই ক্যাপ এর আরও অন্যান্য জরুরি বিষয়াদি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে পুরো আর্টিকেলটি আপনাকে পড়তে হবে।
ই ক্যাপ আমরা অনেকেই ব্যবহার করি, আবার অনেকেই এর নাম শুনেছি। তবে সঠিকভাবে আমরা জানি কি ই ক্যাপ খেলে কি হয় সেই সম্পর্কে? যদি আপনি এ বিষয়ে সঠিক তথ্য না থাকেন তাহলে আমাদের আজকের আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে জেনে যাবেন। তো চলুন বিস্তারিত শুরু যাক।
ই ক্যাপ খেলে কি হয়
আমাদের শরীর শুধুমাত্র খাবার থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ই’ পায় না। তখন চিকিৎসকেরা ভিটামিন ই’ বা ই ক্যাপ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। ই ক্যাপ খাওয়ার ফলে শরীর বিভিন্ন উপকার পায়। প্রতিদিন ই ক্যাপ আপনার স্বাস্থের অনেক উন্নতি এনে দিতে পারে। ই ক্যাপ খেলে কি হয় আপনি কি জানেন? না জেনে থাকলে ই ক্যাপ খেলে আসলে কি হয় তা বিস্তারিতভাবে জেনে নিন।
- ই ক্যাপ নিয়মিত খেলে আপনার ত্বকের সানবার্ন কম হয়।
- ই ক্যাপ নিয়মিত সেবন করলে হাড়ের নানান রকম সমস্যা দূর হয় এর পাশাপাশি হাড়ের স্বাস্থ ভালো থাকে।
- বন্ধত্বের সমস্যা রোধ হয় ই ক্যাপ খাওয়ার ফলে।
- কিডনির সমস্যা প্রতিরোধ করতে খুবই কার্যকারী হলো ই ক্যাপ। নিয়মিত ই ক্যাপ খেলে কিডনীকে সুস্থ রাখা যায়।
- হৃদরোগের আশঙ্কা কমে ই ক্যাপ খাওয়ার ফলে।
- চর্মরোগ প্রতিরোধের ভালো একটি সমাধান হলো ই ক্যাপ। পর্যাপ্ত ই ক্যাপ খেলে চর্মরোগ হওয়ার ঝুঁকি কমে।
ই ক্যাপ এর উপকারিতা ও অপকারিতা
সাধারনত আমরা জানি শরীরে ভিটামিন ই’ এর ঘাটতি পূরনের জন্য ভিটামিন ই’ সমৃদ্ধ যে ক্যাপসুল খাওয়া হয় তাই ই ক্যাপ। তবে ই ক্যাপ কি শুধু শরীরে ভিটামিন এর চাহিদা পূরন করে? না এছারাও আরও বেশ কিছু উপকারিতা ই ক্যাপ এর মধ্যে রয়েছে। তো চলুন সেগুলো জেনে নেওয়া যাক-
ই ক্যাপ এর উপকারিতা
- ই ক্যাপ ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। ই ক্যাপের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন ই, যা একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। ফলে ত্বককে বিভিন্ন ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে এবং ত্বকের উজ্জলতা বৃদ্ধি পায়।
- ত্বককে ময়েশ্চারাইজার রাখতে সাহায্য করে ই ক্যাপ। শীতকালে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়, এ সময় ত্বকের জন্য ভালো একটি উপাদান হলো ই ক্যাপ। ই ক্যাপসুলের মধ্যকার তেল সারারাত মুখের ত্বকে লাগালে ত্বক হবে ময়েশ্চারাইজার।
- নখের ক্ষতি এড়াতে ব্যবহার করুন ই ক্যাপ। ভিটামিন ই ক্যাপের মধ্যে থাকা তরল পদার্থ বের করে নখের চারপাশে ভালোভাবে লাগালে নখ ভাঙাসহ, নখের বিভিন্ন সমস্যা প্রতিরোধ করা যায়।
- ভিটামিন ই’ ক্যাপ চুল পড়া কমাতে ও নতুন চুল গজাতে বিশেষভাবে ভূমিকা রাখে। সেক্ষেত্রে চুলের জন্য আপনি যে তেল ব্যবহার করছেন, সে তেলের সাথে ই ক্যাপ মিশিয়ে ব্যবহার করবেন চুল পড়া কমবে এবং নতুন চুল গজাবে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় ই’ ক্যাপ সেবনের ফলে। ভিটামিন ই এর অভাবে শরীরে যেসব রোগ হয় তা সবই প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে ই ক্যাপ।
- চোখকে বিভিন্ন ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে ই ক্যাপ। ই ক্যাপ চোখের রেটিনা সুরক্ষিত রাখে যার ফলে চোখের বিভিন্ন রোগ যেমন-ছানি পড়া, ম্যাকুলার ডিজেনারেশন প্রভৃতি রোগের ঝুঁকি কমে।
- হাড়ের সমস্যাকে প্রতিরোধ করে ই ক্যাপ।
ই ক্যাপ এর অপকারিতা
ই ক্যাপের উপকারিতা থাকলেও অতিরিক্ত ব্যবহারে এবং ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার না করলে, এর কিছু অপকারিতা লক্ষ করা যায়। জেনে নিন ই ক্যাপের অপকারিতাগুলো কি কি-
- ই ক্যাপ ব্যবহারের ফলে অনেক সময় কারও কারও ক্ষেত্রে পেটের নানান ধরণের সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমন- বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া, পেট ফাঁপা ভাব ইত্যাদি দেখা দিতে পারে।
- ই ক্যাপ অতিমাত্রায় সেবনের ফলে অনেকের লিভারের ক্ষতি হতে পারে।
- ই ক্যাপ ব্যবহারে অনেকের দেহে এলার্জিজনিত সমস্যা হতে পারে।
- যাদের দেহে হাইকোলেস্টরল জনিত সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এটি বেশ ক্ষতিকারক।
- তাই ই ক্যাপ উপকারী হলেও আমাদের উচিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তা ব্যবহার করা। বয়স , শারিরিক অবস্থা বিবেচনা করে চিকিৎসকেরা ভিটামিন ই’ অর্থ্যাৎ ই ক্যাপ ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
ই ক্যাপ এর কাজ কি
চুল থেকে শুরু করে ত্বকের সৌন্দর্য সব কিছুর জন্য বেশ ভালো কাজ দেয় ই ক্যাপ। ই ক্যাপের অনেক ব্যবহার রয়েছে যেগুলো আমাদের দৈনন্দিন জীবনের জন্য অপরিহার্য। ই ক্যাপ কি কি কাজে আসে অনেকেই সে বিষয়ে বিস্তারিত জানেন না। তো চলুন বিস্তারিতভাবে জেনে নিই ই ক্যাপ এর কাজ কি।
চুলের যত্নে ই ক্যাপ: চুলের সমস্যা সমাধানে ভালো কাজ দিয়ে থাকে ই ক্যাপ। চুল পড়া রোধে এবং তার সাথে নতুন চুল গজাতে ই ক্যাপের জুড়ি মেলা ভার। আপনার চুলে ব্যবহৃত তেলের সাথে ই ক্যাপ মিশিয়ে চুলে ও স্ক্যাল্পে লাগিয়ে তিন ঘন্টা মতো রেখে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে দুইদিন ব্যবহার করুন তাহলেই এর ফলাফল দেখতে পাবেন।
ত্বকের যত্নে ই ক্যাপ: ই ক্যাপের গুরুত্ব ত্বকের জন্য অনেটা বেশি। ত্বকের যেকোনো ধরনের সমস্যায় দ্রুত সমাধান এনে দেয় ই ক্যাপ। ত্বকের বিভিন্ন দাগ ছোপ দূর করতে, বার্ধক্যের ছাপ কমাতে সাহায্য করে। তাই ত্বকের সুরক্ষায় ভরসা করতে পারেন ই ক্যাপের উপর।
নখের যত্নে ই ক্যাপ: সারাদিনের ব্যস্ততায় যেমন-রান্না, থালা বাসন ধোয়া, ঘর পরিষ্কার করা ইত্যাদি কাজের জন্য আমাদের হাতের নখ এর সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায়। তাই নখের সৌন্দর্য ফিরে পেতে আমাদের নখের যত্ন নেওয়াটা জরুরি। আর নখের যত্নে ভালো কাজ করে ই ক্যাপ। এজন্য ই ক্যাপ খুলে তার ভেতরের তেল নখ ও নখের আশেপাশে লাগিয়ে সারারাত রেখে দিন।
ই ক্যাপ ৪০০ খেলে কি হয়
ই ক্যাপ হলো একটি এন্টি অক্সিডেন্ট যা আমরা বিভিন্ন খাবারের মধ্যে পেয়ে থাকি যেমন- সবুজ শাকসবজি, বাদাম, বিভিন্ন বীজ ইত্যাদি। তবে আমাদের মধ্যে অনেকের শরীরে শুধুমাত্র খাদ্য থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ই পায় না। যার ফলে তাদের ভিটামিন ই এর অভাবজনিত বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। আর তাদেরকে চিকিৎসকেরা ই ক্যাপ ৪০০ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। সুতরাং ই ক্যাপ ৪০০ ভিটামিন ই এর অভাব পূরন করবে। ই ক্যাপ খেলে-
- চুলের সৌন্দর্য ঠিক থাকে।
- মাথার ত্বকে রক্ত সরবরাহ বাড়ায়।
- চুলের গড়া শক্ত ও মজবুত হয়।
- হার্টের স্বাস্থ ভালো থাকে।
ই ক্যাপ এর পার্শপ্রতিক্রিয়া
অন্যান্য সকল ঔষধের মত ই ক্যাপের কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। ই ক্যাপের সাধারণ কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিম্নে উল্লেখ করা হলোঃ
- অবসাদগ্রস্থতা
- মাথাব্যথা
- পেট ব্যথা
- অকারণে ক্লান্তিভাব
- বমি হওয়া কিংবা বমি হবে এমন ভাব
- এলার্জিজনিত সমস্যা
- ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা
- ডায়াবেটিসের মাত্রার ভারসাম্যহীনতা ও
- গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা ইত্যাদি।
ই ক্যাপ এর দাম
ভিটামিন ই সাপ্লিপেন্টকে আমরা ই ক্যাপ নামে চিনি। এটি এমন একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরের কোষগুলিকে বিভিন্ন ক্ষতি থেকে রক্ষা করে থাকে। বাংলাদেশে এ শক্তিশালী ই ক্যাপ এর দাম কত তা নিচের আলোচনা থেকে জেনে নিন।
ই ক্যাপ এর দাম কোম্পানি অনুযায়ী কিছু পার্থক্য হতে পারে। নিচে কয়েকটি কোম্পানির ই ক্যাপের দাম উল্লেখ করা হলো-
- ড্রাগ ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড: প্রতি পিচের মূল্য ৭ টাকা , ১ পাতার মূল্য ১০৫ টাকা।
- রেনাটা ফার্মা লিমিটেড: প্রতি পিচের মূল্য ৬.০২ টাকা, ১ পাতার মূল্য ৭০ টাকা।
- নিপ্রো জেএমআই ফার্মা লিমিটেড: প্রতি পিচের মূল্য ৭.০২ টাকা, ১ পাতার মূল্য ৭০ টাকা।
ই ক্যাপ ওষুধ সম্পর্কে লেখকের মতামত
পরিশেষে একটা কথা বলে আজকের আলোচনা শেষ করতে চাই সেটা হচ্ছে বিশেষ করে প্রতিদিন ই ক্যাপ আপনার স্বাস্থের অনেক উন্নতি এনে দিতে পারে। ই ক্যাপ খাওয়ার ফলে শরীর বিভিন্ন উপকার পায়। তবে এই ঔষধ সেবন করার আগে আপনাকে অবশ্যই একজন নিবন্ধিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে তারপর সেবন করতে হবে।
আমরা ইতিমধ্যে ই ক্যাপ খেলে কি হয় ও ই ক্যাপ এর উপকারিতা ও অপকারিতাসহ ই ক্যাপ সম্পর্কে আরও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি। আপনারা হয়তো এতক্ষণে সম্পূর্ণ ব্লগ পোষ্টটি পড়ে ই ক্যাপ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে গেছেন। তবে ই ক্যাপ ট্যাবলেট নিয়ে আপনার কোন প্রশ্ন কিংবা মতামত থাকলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
আমাদের আজকের টোফেন ই ক্যাপ খেলে কি হয় সম্পর্কিত পোষ্ট ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করে দিতে পারেন। এতে তারাও ই ক্যাপ খেলে কি হয় সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো জেনে উপকারে আসবে। বিভিন্ন স্বাস্থ্য সম্পর্কিত এমন আরও জরুরি আর্টিকেল পড়তে হলে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন। ধ্যনবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url