মিষ্টি কুমড়ার বিচি খেলে কি হয় - মিষ্টি কুমড়ার বীজ খাওয়ার নিয়ম
আপনি কি মিষ্টি কুমড়ার বিচি খেলে কি হয় ও মিষ্টি কুমড়ার বীজ খাওয়ার নিয়ম কি জানতে চাচ্ছেন? আজকের আর্টিকেলে আমরা মিষ্টি কুমড়ার বিচি খেলে কি হয়, মিষ্টি কুমড়ার বীজ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানবো। আপনি যদি মিষ্টি কুমড়ার বিচির আরও অন্যান্য জরুরি বিষয়াদি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আপনাকে আজকের এই সম্পন্ন আর্টিকেলটি মনযোগ দিয়ে পড়তে হবে।
মিষ্টি কুমড়ার বীজের ব্যবহার ও এই বীজ খাওয়ার প্রক্রিয়া এখনো অনেকের জানা নেই। মিষ্টি কুমড়ার বিচির দাম সম্পর্কে ধারণা না থাকে অনেকে এদিকে আগ্রহ দেখান না। তাই আজকের পোষ্টের মাধ্যমে মিষ্টি কুমড়ার বিচির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কিত সকল বিস্তারিত তথ্য আপনাদের জানানোর চেষ্টা করব। আশা করি আপনারা ধৈর্য সহকারে পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়বেন।
উপস্থাপনা - মিষ্টি কুমড়ার বিচি
সরাসরি উদ্ভিজ্জ প্রোটিন গ্রহণের জন্য মিষ্টি কুমড়ার বিচি খুবই সহজ একটি উপায়। মিষ্টি কুমড়ার বিচির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারলে এ পুষ্টি গুণের ভিত্তিতে আমাদের খাদ্যাভাসের তালিকা মিষ্টি কুমড়া ও এর বীজের নাম চলে আসবে। এছাড়াও মিষ্টি কুমড়ার বিচির দাম মোটামুটি হওয়ায় কমবেশি সকলেই এটিকে নিজেদের খাদ্য তালিকায় রাখতে পারবেন।
মিষ্টি কুমড়া বিচি পুষ্টিগুন
মিষ্টি কুমড়ার বীজের পুষ্টিগণের বিবেচনায় একে পাওয়ার হাউজ নামে অভিহিত করা হয়। মিষ্টি কুমড়ার বীজে রয়েছে বহু পুষ্টি উপাদান যা আমাদের শরীরকে ভালো রাখতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
মিষ্টি কুমড়া আমরা অনেকেই প্রতিনিয়ত তারকারি হিসেবে খেয়ে থাকি। এটি মূলত ভিটামিন এ জাতীয় একটি সবজি। তাই মিষ্টি কুমড়ার বিচিতে প্রচূর পরিমানে পুষ্টি সঞ্চিত হয়। মিষ্টি কুমড়ার বিচি সাধারনত ফ্যাটি এসিড এর সক্রিয় উপাদানে ভরপুর উপাদান। কুমড়ার বিচিতে যেসকল পুষ্টিগুণ রয়েছে তা নিম্নে উল্লেখ করা হলঃ
- এন্টি অক্সিডেন্ট,
- ম্যাগ্নেশিয়াম,
- জিংক,
- ওমেগা ৩ ইত্যাদি।
যা আসলে মিষ্টি কুমড়ার বীজ পুষ্টির দিক থেকে আমাদের দেহে দুর্দান্ত শক্তির যোগান দেয়। আশা করছি আপনারা এই অংশ থেকে মিষ্টি কুমড়া বিচি পুষ্টিগুন জানতে পেরেছেন। এবার চলুন, হাইব্রিড মিষ্টি কুমড়া বীজ সম্পর্কে জেনে নেই।
হাইব্রিড মিষ্টি কুমড়া বীজ
হাইব্রিড মিষ্টি কুমড়ার বীজ হলো উচ্চ ফলিত মিষ্টি কুমড়ার বীজ যা সব ঋতুতেই মোটামুটি পাওয়া যায়। মিষ্টি কুমড়ার বিচির উপকারিতা ও অপকারিতার মধ্যে হাইব্রিড মিষ্টি কুমড়ার গুনাগুন উপচে পড়ার মতো। হাইব্রিড মিষ্টি কুমড়া সাধারনত বীজ বপন করার ২ থেকে ৩ মাসের মধ্যে ফলন হয়।
অর্থাৎ তিন থেকে চার মাসের মধ্যেই মিষ্টি কুমড়া গুলো সংগ্রহ করা হয়। মূলত হাইব্রিড মিষ্টি কুমড়া শীতকালীন ফসল হওয়ায় এর বীজও শীতকালের কিংবা এর পরবর্তী সংখ্যক সময় অর্থাৎ গ্রীষ্মকালীন পরবর্তী সময় পর্যন্ত পাওয়া যায়।
হাইব্রিড জাতের মিষ্টি কুমড়া সাধারনত দেখতে যদিও অনেকটা গোলাকার আকৃতি হয়ে থাকে তবুও এটি বেসিরভাগ সময় দেখতে চ্যাপ্টা আকৃতির হয়, আর এর শাঁশের চারপাশ অনেকটা মোটা হয়ে থাকে এবং অন্যান্য যেসব শীতকালীন সবজি রয়েছে সেগুলো সবুজ বর্ণের হয়ে থাকে যার এটি পাকা শুরু করলে কিছুটা সোনালী রং ধারণ করে।
লোকমুখে বলা হয় হাইব্রিড মিষ্টি কুমড়া ও এর বীজ দুটিই খেতে প্রচুর মিষ্টি তাই এর চাহিদা তুলনামূলক একটু বেশিই হয়। হাইব্রিড মিষ্টি কুমড়ার বীজকে কোথাও কোথাও কালো মানিক কুমড়ার বীজ বলা হয়।
মিষ্টি কুমড়ার বিচি খেলে কি হয়
মিষ্টি কুমড়ার বীজ সাধারণত মিষ্টি কুমড়া থেকে বের করার পর শুকিয়ে সংরক্ষণ করে এরপরে খাওয়া হয়। তাছাড়া সরাসরি খাওয়ার জন্য এটাই প্রক্রিয়াজাত করে বিশেষ করে সালাদ, পাস্তা, স্মুদি, সিরিয়াল, স্যুপ এর সাথে মিলিয়ে মিষ্টি কুমড়ার বীজ খাওয়া যায়।
আপনার দেহে যদি পুষ্টিগুণাগুন কম থেকে থাকে, তাহলে মিষ্টি কুমড়ার বিচি খেতে পারেন তাহলে দেহে ভিটামিন বি, প্রোটিন, আয়রন ইত্যাদি সহ আরও প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করা সম্ভব।
এছাড়াও মিষ্টি কুমড়ার বিচি নিয়মিত খেলে আপনার দেহের ঘুমের অগোছালো সময় বা অনিয়মের ঘুম নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে সহায়তা করবে। মিষ্টি কুমড়ার বিচি গর্ভকালীন অবস্থাতে খেলে এটি মা ও শিশু উভয়ের জন্য উপকারী। আশা করছি আপনারা এই অংশ থেকে মিষ্টি কুমড়ার বিচি খেলে কি হয় তা জানতে পেরেছেন। এবার চলুন, মিষ্টি কুমড়ার বিচির উপকারিতা গুলি জেনে নেই।
মিষ্টি কুমড়ার বিচির উপকারিতা
মিষ্টি কুমড়ার প্রোটিনের এক মহৎ উৎস। সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপনের জন্য উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের আমাদের স্বাস্থ্য ব্যাপক ভূমিকা রাখে। মিষ্টি কুমড়া ও এর বীজ এই নীতির বিপরীতে নয়। মিষ্টি কুমড়ার বীজে অত্যাধিক পুষ্টিসম্পন্ন হওয়ার ফলে এর উপকারিতা বিশাল আকার ধারন সম্ভব।
মিষ্টি কুমড়ার বীজের ভালো গুণাগুনের সমাহারে এর অপকারিতা খুঁজে পাওয়া যায় না। মিষ্টি কুমড়ার বা এর বিচির কোন অপকারিতা নেই বললেই চলে। তাই মিষ্টি কুমড়ার বিচির উপকারিতা নিয়েই আলোচনা করা হলো।
হার্ট ভালো রাখে: মিষ্টি কুমড়ার বিচিতে মানুষের দেহে যেসব পুষ্টি দরকার যেমন ফাইবার, চর্বি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এই সকল উপাদান রয়েছে। যা আমাদের দেহের জন্য খুবই উপকারী বলে সাব্যস্ত হয়েছে।
হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখে: এটি মূলত হৃদ যন্ত্রের উপরে ক্রিয়া করে থাকে অর্থাৎ হৃদযন্ত্রকে সুস্থ এবং ভালো রাখতে যা কিছু প্রয়োজনীয় পুষ্টি দরকার তার সবই রয়েছে মিষ্টি কুমড়ার বিচিতে।
ভালো ঘুম হয়: মিষ্টি কুমড়ার বিচিতে ট্রিপটো ফ্যান নামক একটি অ্যামিনো এসিড উপাদান রয়েছে। যা আমাদের দেহের ভিতরে ঢুকে সেরোটোনিনে পরিবর্তন করে থাকে।
প্রোস্টেট ভালো রাখে: মিষ্টি কুমড়ার বিচি নিয়মিত খেলে বা আপনি যদি মিষ্টি কুমড়ার বিচি নিয়মিত খেতে পারেন তাহলে আপনার দেহের উর্বরতা বাড়াবে এবং প্রোস্টেট এর নানান রকম ক্ষতি হওয়া থেকে প্রতিরোধ করে।
ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়: মিষ্টি কুমড়ার বীজে রয়েছে প্রচূর পরিমানে জিংক যা মূলত আমাদের দেহের নানান ধরণের রোগ প্রতিরোধ করে থাকে। এতে রয়েছে ডি এইচ এ অর্থাৎ 'ডাই-হাইড্রো-এপি-অ্যান্ড্রোস্টেনেডিয়ন' (Di-hydro-epi-androstenedione) এটি আসলে দেহের প্রোস্টেটের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে খুবই সহায়ক।
হাড় মজবুত রাখে: মিষ্টি কুমড়ার বিচিতে প্রচূর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম বিদ্যমান রয়েছে যার ফলে আমাদের দেহের হাড়কে তুলনামূলক মজবুত করে তুলতে সহায়তা করে।
আশা করছি আপনারা এই অংশ থেকে মিষ্টি কুমড়ার বিচির উপকারিতা গুলি জানতে পেরেছেন। এবার চলুন, মিষ্টি কুমড়ার বীজ খাওয়ার নিয়ম গুলি জেনে নেই।
মিষ্টি কুমড়ার বীজ খাওয়ার নিয়ম
মিষ্টি কুমড়ার বীজ খাওয়ার সঠিক নিয়ম হলো সাধারনত ১৫ থেকে ২০ টার মতো বীজ নিয়ে প্রতিদিন খাওয়া উচিত। এই বীজ মিষ্টি কুমড়া থেকে সরিয়ে নিয়ে রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করতে হয়।
এই বীজ যেহেতু শুকিয়ে খেতে হয় সেহেতু এটিকে একেবারেই অল্প পরিমাণ তেলে হালকা করে ভেজে শুকনো খাবার হিসেবে সকালের অথবা বিকালের নাস্তায় খাওয়া যেতে পারে। তাছাড়া সালাতে হিসেবেও মিষ্টি কুমড়োর বীজ খাওয়া যায়।
আবার খাবারের পুষ্টিগুণ বাড়াতে তরকারিতেও এই বীজ দিয়ে রান্না করে খাওয়া যায়। আশা করছি আপনারা এই অংশ থেকে মিষ্টি কুমড়ার বীজ খাওয়ার নিয়ম জানতে পেরেছেন। এবার চলুন, মিষ্টি কুমড়ার বিচির দাম কত তা জেনে নেই।
মিষ্টি কুমড়ার বিচির দাম
মিষ্টি কুমড়ার বীজের উপকারিতার উপর ভিত্তি করে মিষ্টি কুমড়ার বীজের দাম তুলনামূলক কমবেশি সংবলিত হিসেবে নির্ধারিত। রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করা মিষ্টি কুমড়ার বিচি বাজারজাতকরণ করা হয়। মিষ্টি কুমড়ার বীজ প্রতি ১০০ গ্রাম মিষ্টি দাম মুলত ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা করে পাওয়া যায়।
তবে অনেক সময় স্থানভেদে এর দাম কোথাও আবার কোথাও বেশি হতে পারে। আশা করছি আপনারা এই অংশ থেকে মিষ্টি কুমড়ার বিচির দাম জানতে পেরেছেন।
মিষ্টি কুমড়ার বিচি সম্পর্কে লেখকের মতামত
আমরা ইতিমধ্যে মিষ্টি কুমড়ার বিচি খেলে কি হয় ও মিষ্টি কুমড়ার বীজ খাওয়ার নিয়মসহ মিষ্টি কুমড়া সম্পর্কে আরও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি। আপনারা হয়তো এতক্ষণে সম্পূর্ণ ব্লগ পোষ্টটি পড়ে মিষ্টি কুমড়ার বীজ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে গেছেন। তবে মিষ্টি কুমড়ার বীজ নিয়ে আপনার কোন প্রশ্ন কিংবা মতামত থাকলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
আমাদের আজকের কারি মিষ্টি কুমড়ার বিচি সম্পর্কিত পোষ্ট ভালো লাগলে আপনার প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করে দিতে পারেন। এতে তারাও কারি মিষ্টি কুমড়ার বীজ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো জেনে উপকারে আসবে। বিভিন্ন স্বাস্থ্য সম্পর্কিত এমন আরও জরুরি আর্টিকেল পড়তে হলে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন। ধ্যনবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url